ঢাকা , রবিবার, ১৩ এপ্রিল ২০২৫ , ২৯ চৈত্র ১৪৩১ বঙ্গাব্দ , ই-পেপার
সংবাদ শিরোনাম
দ্বৈত নাগরিক সরকারি চাকুরেদের সন্ধান চলছে চারুকলায় ফ্যাসিস্টের মুখে আগুন ভোটে একমঞ্চে লড়বে ইসলামি দলগুলো মার্চ ফর গাজা’র ঘোষণাপত্র ও অঙ্গীকারনামায় যা আছে গাজায় গণহত্যা বন্ধের দাবি বেশি দামে বিক্রি হচ্ছে ইলিশ ঊর্ধ্বমুখী সবজিও সবাই মিলে সুন্দর দিন কাটানোর সময় ফিরবেই-ছায়ানট দিনেদুপুরে চলন্ত বাসে ডাকাতি, স্বর্ণালংকার লুট কিশোরগঞ্জে মেঘনায় গোসল করতে নেমে দুই বোনের মৃত্যু নির্মাণাধীন ভবন থেকে পড়ে নির্মাণশ্রমিকের মৃত্যু আশা করি ড. ইউনূস কথা রাখবেন- সেলিমা রহমান লিবিয়া থেকে ফিরলেন আরও ১৬৭ বাংলাদেশি ৩ মাসে বন্ধ ৬৪৮ ইটভাটা জরিমানা ২৪ কোটি বাড়ির পাশে মিলল মা-ছেলেসহ ৩ জনের বস্তাবন্দি মরদেহ আধিপত্য বিস্তার নিয়ে সংঘর্ষ, বাড়িঘর-দোকান ভাঙচুর চাঁদপুরে আগুনে পুড়েছে ১৭ ব্যবসা প্রতিষ্ঠান ডেঙ্গুর তীব্র ঢেউয়ের শঙ্কা প্রতিরোধে প্রস্তুতি নেই অন্ধকার থেকে উত্তীর্ণ হওয়ার বার্তা চীনের পাল্টা শুল্কে মার্কিন বাজারে ধস আইএস-আল কায়েদার পতাকা নিয়ে মিছিল
সংস্কার কমিশনে প্রস্তাব

বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন চায় ইসলামী আন্দোলন

  • আপলোড সময় : ১১-০৪-২০২৫ ০৭:২৩:২৩ অপরাহ্ন
  • আপডেট সময় : ১১-০৪-২০২৫ ০৭:২৩:২৩ অপরাহ্ন
বাংলাদেশের নাম পরিবর্তন চায় ইসলামী আন্দোলন
‘গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ’ নাম পরিবর্তন করে ‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ বা ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’ নামকরণের প্রস্তাব দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। গতকাল বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টায় দলের মহাসচিব প্রিন্সিপাল হাফেজ মাওলানা ইউনুছ আহমেদের নেতৃত্বে একটি প্রতিনিধি দল জাতীয় সংসদ ভবনের ভেতরে অবস্থিত কমিশনের কার্যালয়ে পৌঁছান। তারা কমিশনের সহ-সভাপতি অধ্যাপক আলী রীয়াজের কাছে লিখিত মতামত জমা দেন।
লিখিত মতামতে দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়, রাষ্ট্রের নামের মধ্যে যেন জনগণের কল্যাণ নিশ্চিত করার দর্শন প্রতিফলিত হয়, সে জন্য ‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ নামটি প্রস্তাব করছি।
জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে মোট ১৮২ দফা সংস্কার প্রস্তাব জমা দিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। এসব প্রস্তাবের মধ্যে দলটি ১৪৫টিতে একমত, ২৬টিতে দ্বিমত এবং ৪১টি নতুন প্রস্তাব উত্থাপন করেছে। এছাড়া তারা ৪টি মৌলিক প্রস্তাবও দিয়েছে।
দলটির পক্ষ থেকে বলা হয়েছে, তারা সংবিধান সংস্কারের অধিকাংশ প্রস্তাবের সাসঙ্গে একমত। বিশেষ করে সংবিধানের মূলনীতি পরিবর্তন, প্রধানমন্ত্রী ও রাষ্ট্রপতির ক্ষমতার ভারসাম্য আনা, একজন ব্যক্তি একাধিক পদে না থাকা, দুই মেয়াদের বেশি প্রধানমন্ত্রী না থাকা এবং ৭০ অনুচ্ছেদের বিলুপ্তি-এসব বিষয়ে ঐকমত্য পোষণ করেছে দলটি। পিআর পদ্ধতির (প্রপোরশনাল রিপ্রেজেন্টেশন) নির্বাচন ব্যবস্থা চালুর পক্ষেও জোরালো অবস্থান জানিয়েছে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশ। দলটির দাবি, এই পদ্ধতি চালু হলে ক্ষমতার ভারসাম্য প্রতিষ্ঠা হবে এবং ভবিষ্যতের স্বৈরতন্ত্র প্রতিরোধ করা যাবে। দলটি এই বিষয়কে রাষ্ট্রীয় সংস্কারের অন্যতম প্রধান উপায় হিসেবে দেখছে এবং এ বিষয়ে নতুন প্রস্তাবনাও যুক্ত করেছে। রাষ্ট্রের নাম পরিবর্তনের প্রস্তাবের সঙ্গেও ইসলামী আন্দোলন একমত তবে রাষ্ট্রের নাম হিসেবে ‘পিপলস ওয়েলফেয়ার স্টেট অব বাংলাদেশ’ বা ‘বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র’ প্রস্তাব করেছে। বিচার বিভাগীয় ২৩টি প্রস্তাবের মধ্যে ২১টির সঙ্গেই ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশে একমত পোষণ করেছে। এর বাইরে শরীয়াহ কোর্ট স্থাপনের প্রস্তাব দেয়া হয়েছে এবং প্রমাণিত অপরাধীকে রাষ্ট্রপতি ক্ষমা করার ক্ষেত্রে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের সম্মতিকে যুক্ত করার প্রস্তাব করা হয়েছে। জনপ্রশাসন বিষয়ে প্রস্তাবিত মোট ২৬টি সংস্কারের মধ্যে ১২টি একমত পোষণ করেছে ইসলামী আন্দোলন। ৯টি প্রস্তাবের সঙ্গে দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে। আর ৫টির সঙ্গে আংশিক একমত পোষণ করা হয়েছে। এরমধ্যে বিশেষ করে প্রাদেশিক ও সিটি গভর্নমেন্ট প্রস্তাবের সঙ্গে এবং মেম্বারদের ভোটে চেয়ারম্যান নিয়োগের বিষয়ে দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে। এছাড়া  অফিসিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট সংশোধনের বদলে পুরো বাতিলের প্রস্তাব করা হয়েছে। প্রশাসনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের নিয়োগে মন্ত্রীপরিষদ কমিটিরও বিরোধিতা করা হয়েছে। সংবিধান সংস্কার কমিশনের ৭০টি প্রস্তাবের মধ্যে ৬১টি প্রস্তাবে একমত, ৩টিতে একমত পোষণ করা হয়নি। ৬টিতে আংশিক একমত পোষণ করা হয়েছে। নতুন প্রস্তাব এবং মন্তব্য যুক্ত করা হয়েছে ১১টি ও মৌলিক প্রস্তাব ৪টি। বিচার বিভাগ সংস্কার কমিশনের ২৩টি প্রস্তাবের মধ্যে ২১টি প্রস্তাবে একমত, ২টিতে দ্বিমত পোষণ করা হয়েছে। জনপ্রশাসন সংস্কার কমিশনের ২৬টি প্রস্তাবের মধ্যে ১২টি প্রস্তাবে একমত, ৯টি একমত পোষণ করা হয়নি। একটি বিশেষ মূল্যায়নসহ ১৩টি নতুন প্রস্তাবনা যুক্ত করা হয়েছে। নির্বাচন সংস্কার কমিশনের ২৭টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৮টি প্রস্তাবে একমত, ৯টি একমত পোষণ করা হয়নি। নতুন প্রস্তাবনা যুক্ত করা হয়েছে একটি। দুদক সংস্কার কমিশনের ২১টি প্রস্তাবের মধ্যে ১৮টি প্রস্তাবে একমত, ৩টিতে একমত পোষণ করা হয়নি। নতুন প্রস্তাবনা ৫টি ও সুপারিশ যুক্ত করা হয়েছে তিনটি। পুলিশ সংস্কার কমিশনের ১৫টি প্রস্তাবের সবগুলোতেই একমত পোষণ করা হয়েছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনে লিখিত প্রস্তাব জমা দেয়ার পর গণমাধ্যমের সামনে ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন বলেন, চারটি মৌলিক প্রস্তাব উত্থাপন করা হয়েছে। এর মধ্যে প্রথমটি আত্মশুদ্ধি বা শুদ্ধাচার। তিনি বলেন, জাতীয় পর্যায়ে আত্মশুদ্ধি না থাকলে মানুষ দেশপ্রেমিক হতে পারে না। ইসলামী আন্দোলন তার প্রস্তাবে জাতীয় সকল স্তরে তাজকিয়া নফস বা আত্মশুদ্ধির গুরুত্ব তুলে ধরেছে। দ্বিতীয়ত, জবাবদিহি প্রসঙ্গে অধ্যাপক আশরাফ বলেন, জবাবদিহি করতে হবে আল্লাহর কাছে, নিজের বিবেকের কাছে, জনগণের কাছে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে। এই জবাবদিহি নিশ্চিত করার মাধ্যমে সুশাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব বলে মনে করেন তিনি। এছাড়া, দেশে চুরি, ডাকাতি, ধর্ষণ, দুর্নীতি ও সন্ত্রাস বন্ধে ইসলামী আন্দোলন বিশ্বাস করে, বিদ্যমান আইন ব্যর্থ হয়েছে। তারা প্রস্তাব করেছে, এই অপরাধগুলো বন্ধ করার জন্য শরীয়াহ আইন কার্যকর করা জরুরি।
অধ্যাপক আশরাফ বলেন, শরী’আ আইন সার্বজনীন, দুষ্টের দমন এবং সৃষ্টের পালন নিশ্চিত করতে পারে। তিনি বলেন, দেশে বর্তমানে ৮ বছরের শিশু ধর্ষিত হচ্ছে, দুর্নীতি হচ্ছে, চাঁদাবাজি, টেন্ডারবাজি চলছে। এগুলো বন্ধ হচ্ছে না কারণ দেশে শরীয়াহ আইন নেই। তবে, ইসলামী আন্দোলন নির্বাচন ব্যবস্থায় পিআর পদ্ধতি চালু করতে চায়। আশরাফ আলী আকন বলেন, পৃথিবীর ৯১টি রাষ্ট্রে পিআর পদ্ধতি চালু রয়েছে এবং এটি স্বৈরতন্ত্রের পথ বন্ধ করতে এবং রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা, জনমতের প্রতিফলন, অন্তর্ভুক্তিমূলক কার্যকরী সংসদ গঠনে সহায়ক হবে। তিনি বলেন, ২৪-এর গণঅভ্যুত্থানের চেতনা বাস্তবায়নে পিআর পদ্ধতির নির্বাচন যুগান্তকারী পদক্ষেপ হতে পারে।
প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন, দলের প্রেসিডিয়াম সদস্য অধ্যাপক আশরাফ আলী আকন, যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা গাজী আতাউর রহমান ও ইঞ্জিনিয়ার আশরাফুল আলম, সহকারী মহাসচিব মাওলানা আহমদ আবদুল কাইয়ূম।
 

নিউজটি আপডেট করেছেন : Dainik Janata

কমেন্ট বক্স